দুর্ঘটনাক্রমে বা জন্ম থেকেই, অনেকেরই কোনও হাত নেই। তবে তাদের বেশিরভাগই
কৃত্রিম হাত পেতে পারেনি কারণ এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। একটি সমীক্ষা
অনুসারে, ভারতে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রায় ৪০,০০০ মানুষ এক বা
দুই হাত নষ্ট হয়ে যায়।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা প্রশান্ত গাদে, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে
ইলেকট্রনিক্স পড়তে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা নিয়ে
কলেজ শিক্ষার বিশাল এক গ্যাপ আবিষ্কার করেছিলেন। প্রশান্ত সর্বদা নতুন কিছু
আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখতেন। তৃতীয় বর্ষে তিনি কলেজ ছেড়ে রোবোটিক্স কোর্সে
যোগ দেন। তারপরে তিনি পুনে চলে গেলেন।
সেখানে তিনি নিকোলাস হুচিট
সম্পর্কে জানতে পারেন। নিকোলাস একজন বায়োনিক হ্যান্ড মেকার। নিকোলাস নিজের
কাটা হাতের জন্য একটি বায়োনিক হাত তৈরি করেছিলেন। তিনি প্রশান্তের
অনুপ্রেরণায় পরিণত হন।
পুনে থাকাকালীন প্রশান্তের একটি সাত বছরের
কিশোরীর সাথে দেখা হয়েছিল। জন্মের পর থেকে মেয়েটির দুটি হাত নেই।
প্রশান্ত মেয়েটির জন্য কৃত্রিম হাত খুঁজছেন। পরে, কৃত্রিম হাতটি এত
ব্যয়বহুল যে মেয়েটির পরিবারের পক্ষে এটি বহন করা অসম্ভব। এখানেই তাঁর
জীবন এক নতুন মোড় নেয়।
২০১৫ সালে, দীর্ঘ গবেষণার পরে, প্রশান্ত কৃত্রিম হাতে তৈরি করেছিলেন।
তারপরে, ২০১৬ সালে তিনি ইনালি নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরই
মধ্যে প্রশান্ত প্রায় ১৫০০ টি সিনথেটিক হাত বিভিন্ন লোককে দিয়ে দিয়েছেন।
এবং প্রায় ৩,০০০ লোক কেবল ৫০ হাজার টাকায় কৃত্রিম হাত পেয়েছিল। স্বল্প
মূল্যের কৃত্রিম হাতে তাঁর আবিষ্কার পুরো বিশ্বকে অবাক করেছে।
তবে শুনতে শুনতে এটি গল্পের মতো মনে হলেও প্রশান্তের এই দীর্ঘ রাস্তাটি
কোনও মসৃণ ছিল না। অনেক বাধা এসেছে। তাকে বিভিন্ন মন্তব্য শুনতে হয়েছিল।
কিন্তু কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। কারণ তিনি তার স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ
ছিলেন।