ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং কি একই জিনিস। দুটোই কি একই পথের পথিক।নাকি দুটোই সম্পূর্ণ আলাদা। অনেকেই এই দুটো বিষয় গুলিয়ে ফেলে।
আর তাই আজ আমি এই ফ্রিলান্সিং ও আউটসোর্সিং নিয়ে কিছু কোর বিষয় আলোচনা
করবো যেগুলো জানলে আপনার বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে যাবে।তো চলুন শুরু করা যাক।
——–
প্রথমেই চলুন জেনে নেই ফ্রিলান্সিং কি?
——-
ফ্রিলান্সিং একটি ইংলিশ শব্দ। যার সহজ বাংলা হল “মুক্ত পেশা”। আমাদের
অনেকের একটা ভুল ধারণা যে “ফ্রিলান্সিং করে টাকা আয় করা যায়”। আসলে
ফ্রিলান্সিং হচ্ছে টাকা উপার্জনের একটা মাধ্যম। চলুন আমরা উদাহারনের
মাধ্যমে বুজি। ধরুন, ‘আকবর সাহেব পেশায় একজন রিক্সা চালক। উনি সারাদিন
যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে টাকা আয় করেন। লক্ষ্য করবেন যে, যারা রিক্সা চালান
উনাদের কোন টাইম শিডিউল নেই। যখন ইচ্ছা রিক্সা চালান, যখন ইচ্ছা বিশ্রাম
নেন, প্যাসেঞ্জারের সাথে ভাড়ায় বনিবনা না হলে সরাসরি বলেন ‘যামু না!’ এক
কথায় উনি একেবারে স্বাধীন। উনার যদি মনে হয় আজকে শরীর খারাপ, আজকে রিক্সা
নিয়ে বেড় হবো না। দুনিয়ার কারো সাধ্য আছে উনাকে জোর করার? তাহলে আমরা বলতে
পারি ‘রিক্সা চালানোর পদ্ধতি হল ফ্রিলান্সিং’ এবং রিক্সা চালক হলেন
‘ফ্রীলেন্সার’।
একিভাবে একজন রাজমিস্ত্রি, সিএনজি চালক, ঠেলাগাড়ির চালক একেকজন ‘ফ্রীলেন্সার’ এবং তাদের কাজের মাধ্যম টা হচ্ছে ‘ফ্রিলান্সিং’
আবার একজন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বা ভার্সিটি প্রফেসর কিন্তু ‘ফ্রীলেন্সার’
না। কারন উনাদের একটা টাইম মেনে চলতে হয়। অফিস ৯ টায় হলে যেভাবেই হউক ৯ টার
আগে অফিসে যাওয়া লাগবে। সময়মত না গেলে “উপরমহল” থেকে ঝাড়ি তো খেতেই হয়,
বোনাস হিসেবে চাকরীও চলে যেতে পারে! আবার সকালে উঠে মনে হল আজ শরীর
ম্যাজম্যাজ করছে বা বিকালের দিকে মনে হল একটু বিশ্রাম দরকার। যাই করেন
আপনার ইচ্ছা মতো কিছু করতে পারেন না! আগে কাজ শেষ করেবন, তারপর বেঁচে থাকলে
বাকিটা
আউটসোর্সিং কি
—-
এবার আসি ‘আউটসোর্সিং’ কি। ইদানীং আমাদের দেশে ‘ডেঙ্গুর’ কারনে অনেকেই মারা গেছেন এবং অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন. এই ডেঙ্গু বেশী দেখা দেয় বর্ষাকালে। এখন প্রতি সিটি কর্পোরেশন এর
নিজস্ব লোকজন আছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য। এখন দেখা গেলো যা মানুষ
আছে তা পর্যাপ্ত নয়। এই কয়েকমাসে ২-৩ গুন মানুষ লাগবে পরিষ্কার কাজ
ভালোভাবে করার জন্য। এখন সিটি কর্পোরেশন এর হাতে ২ টা রাস্তা আছে। হয়
অতিরিক্ত যাদের লাগবে তাদের একবারে নিয়োগ দেওয়া। তাতে যে ঝামেলা হবে দেখা
যাবে তাদের দরকার ২-৩ মাসের জন্য কিন্তু বেতন দিতে হবে ১২ মাস! যা একটি লস
প্রোজেক্ট। অন্য উপায় হল সিটি কর্পোরেশন যে অতিরিক্ত মানুষ জন লাগবে তাদের
কে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারে। যে তোমরা ৩ মাস থাকবে। কাজ শেষ হলে
টাকা নিয়ে চলে যাবে। এতে সিটি কর্পোরেশন এর লাভ হল। এটাই হচ্ছে
‘আউটসোর্সিং’।
তেমনি আমার বাসা বানাবো। রংমিস্তি, কাট মিস্তি সবাইকে
কাজের জন্য নিয়োগ দিলাম। কাজ শেষ। লেনদেন ও শেষ। আবার কোথায় যাবো। রিক্সা
নিলাম, ভাড়া ঠিক করলাম। আমি আমার জায়গামত গিয়ে ভাড়া দিয়ে চলে গেলাম।
সুতরাং ফ্রিলান্সিং ও আউটসোর্সিং সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন।